বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
বীরগঞ্জের ৮নং ভোগনগর ইউনিয়ন বিএনপি’র উদ্যোগে গণসমাবেশ ভারতে নিয়ে পতিতালয়ে স্ত্রীকে বিক্রি; ফিরিয়ে আনলো যশোর পিবিআই র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়; পাঁচজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট যশোরে ডা. শামারুখ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল খালেককে জেল হাজতে প্রেরণ; অগ্নিসংযোগ মামলায় একে একে আটক ২০, ভিন্ন দাবি রাজশাহী জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে ঘুষ ছাড়া মিলবেনা খতিয়ান-নকশা জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন’র ডাইরেক্টর হলেন কৃষিবিদ শামীম সাংবাদিক হামিদুল ইসলাম সফল সংগঠক হিসেবে বিটিএসএফ সম্মাননায় ভূষিত শ্যামনগরে এনগেজ প্রকল্পের নারী সদস্যদের স্বামীদের নিয়ে পুরুষ সংবেদনশীল কর্মশালা জগন্নাথপুরে মসজিদকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জন গ্রেফতার

শরণখোলায় অতিবৃষ্টিতে রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষতি

শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: / ৬ পড়া হয়েছে
আপডেট মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০২৪

শরণখোলায় অতিবৃষ্টির কারনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে হাজার হাজার বিঘা রোপা আমনের চারা পঁচে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের ৩১টি স্লুইস গেটের গভীরতা কম থাকা এবং ফসলি জমির মধ্যে থেকে প্রবাহিত অসংখ্য খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, প্রাথমিক হিসাবে অতিবৃষ্টির জলাবদ্ধতায় উপজেলার চারটি ইউনিয়নে সাড়ে তিন কোটি টাকার রোপা আমনের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে। চারটি ইউনিয়নের মধ্যে ১নম্বর ধানসাগর ইউনিয়নে ক্ষতির পরিমান সবচেয়ে বেশি।
এদিকে বিভিন্ন এলাকার চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় এক মাস ধরে বৃষ্টির পানি আটকে আছে জমিতে। নিচু এলাকার বিঘায় বিঘায় জমির আমন ক্ষেত এখনো পানির নিচে। এসব জমির বেশির ভাগ চারাই পঁচে গেছে।

পানির ওপর থেকে কিছু কিছু চারার মাথা দেখা গেলেও তা থেকে ভালো ফলন হবে না। আর যেসব জমির সমস্ত চারা নষ্ট হয়ে গেছে, সেখানে আর নতুন করে রোপণ করারও উপায় নেই। এখন মৌসুমের শেষ সময় বীজ বা চারা কোনোটাই পাওয়ার সুযোগ নেই। যার ফলে কৃষি বিভাগের হিসাবের চেয়েও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো কয়েকগুণ বেশি হবে বলে দাবি করছেন চাষিরা।

এমন পরিস্থিতিতে চলতি আমন মৌসুমে কাঙ্খিত ফসল না পাওয়া এবং ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছে চাষি ও কৃষি বিভাগ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শরণখোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৩৫/১ পোল্ডারের ৬২ কিলোমিরার বেড়িবাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে ৩১টি ছোট-বড় স্লুইসগেট রয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগই জমি থেকে এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতায় নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ধানসাগর ইউনিয়নের আওতায় ১২টি গেটের ৫টির কপাট নষ্ট। এছাড়া, ফসলের মাঠের মধ্যে থেকে প্রবাহিত খালের অধিকাংশরই অস্তিত্ব নেই। আর যেগুলো আছে তাও ভরাট হওয়ায় পর্যাপ্ত পানি নামতে পারে না। যে কারণে প্রতি বছরই জলাবদ্ধতায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

আর এবছর অসময়ে অতিমাত্রায় বৃষ্টিপাতের ফলে ক্ষতির পরিমান অন্যান্য বছরের তুলনায় বহুগুণ বেশি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ধানসাগর ইউনিয়নের হোগলপাতি গ্রামের চাষি মো. ছগির শরীফ জানান, তিনি এবছর ২৫ বিঘা জমিতে আমনের চাষ করেছেন। এক বিঘা জমি চাষাবাদে খরচ হয়েছে প্রায় ৯ হাজার টাকা। কিন্তু বৃষ্টির পানি আটকে তার ১৪ বিঘা জমির চারা পঁচে সব নষ্ট হয়ে গেছে।

একই গ্রামের চাষি কবির শরীফ জানান, তার ১৬ বিঘা জমির ৯ বিঘার এবং শাহজাহান শরীফের ১৪ বিঘার মধ্যে ১২ বিঘা জমির সমস্ত আমনের চারা পঁচে গেছে। এছাড়া মেহেদী হাসানের ১০ বিঘার মধ্যে ৫ বিঘা, সুশান্ত হালদারের ১৪ বিঘার মধ্যে ৬ বিঘা, দুলাল হাওলাদারের ১৪ বিঘার মধ্যে ৪ বিঘা জমির চারা পঁচে গেছে।

খোন্তাকাটা ইউনিয়নের মঠেরপাড় গ্রামের চাষি দুলাল খলিফা জানান তিনি ৩২ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছেন। তার অর্ধেকের বেশি তলিয়ে রয়েছে। একই গ্রামের জামাল খলিফার ১৬ বিঘা, বেলায়েত তালুকদারের ২৮ বিঘা, রাজৈর গ্রামের কামাল শরীফের ৬ বিঘা, রফিকুল শরীফের ৮ বিঘা, গোলবুনিয়া গ্রামের আ. রহমানের ৪ বিঘা জমির রোপণকৃত আমনের চারা দেড় থেকে দুই ফুট পানির নিচে।

এর বেশির ভাগ রোপা আমনে পঁচন ধরেছে।
এভাবে উপজেলার চারটি ইউনিয়নের হাজার হাজার বিঘা জমির রোপা আমনে পঁচন ধরাসহ কোমর সমান পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। গতবছরের তুলনায় এবছর অর্ধেক ফসলও ঘরে উঠবেনা তাদের। মাঠের এমন অবস্থা দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। তারা স্লুইস গেট সংস্কার ও ভরাট খাল দ্রুত খননের দাবি জানিয়েছেন।

শরণখোলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, অতিবৃষ্টিতে এবছর আমনের সর্বনাশ হয়েছে। স্লুইস গেটগুলো সব খুলে দেওয়ার পরও তুলনামূলক নিচু জমির পানি নামছে না। গেটগুলোর গভীরতা কম এবং সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আরো চাষিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে চারটি ইউনিয়নের তথ্য সংগ্রহ করে জলাবদ্ধতায় সাড়ে তিন কোটি টাকা আমনের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে পানি উন্নয় বোর্ড বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মাদ আল বিরুনী বলেন, জনবল সংকট থাকায় সবদিক সামলানো মুশকিল। তারপও যতোটা সম্ভব আমরা চেষ্টা করছি। তাড়াছা যেসব গেটের কপাটে ত্রুটি, সেগুলো দ্রূত মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

আজকের দিন-তারিখ

  • বৃহস্পতিবার
  • ১৪ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১২ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
  • ২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)

Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930