মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী হিজলার ধুলখোলা ইউনিয়নে অবস্থিত হিজলা পিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অনুদানের টাকাসহ কর্মচারী নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। হিজলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পারফরম্যান্স বেজড গ্রান্টস ফর সেকেন্ডারি ইনস্টিটিউশনের (পিবিজিএসআই) প্রকল্পের আওতায় হতদরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের সরকারি বরাদ্ধ ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। কোন কোন স্কুল এ অনুদান পাবে, তা নির্ধারণ করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস।
ধূলখোলা ইউনিয়নের হিজলা পি. এন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০ জন অসহায় মেধাবী শিক্ষার্থীর নামে ৫ হাজার টাকা করে মোট এক লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। জানা গেছে, বরাদ্ধের এ টাকা সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অথবা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের ২০ জন অসহায় মেধাবী শিক্ষার্থীকে বাছাই করেন এবং শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মোবাইল ফোনের বিকাশ অথবা নগদ অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন ও শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ হতদরিদ্র পরিবারের এসব শিক্ষার্থীর অ্যাকাউন্ট নম্বর পরিবর্তন করে টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মহলে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি তারা।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে এ প্রতিবেদককে বলেন, বিভিন্ন সমস্যার কারণে শিক্ষার্থীদের টাকাটা দেওয়া হয় নাই, এ বিষয়ে আমি আপনাদের সঙ্গে পরে যোগাযোগ করব। অথচ ৩০ জুন ২০২৪ এ এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এ বিষয়ে হিজলা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মহিউদ্দিন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, বিষয়টি আমি কিছুই জানিনা প্রধান শিক্ষকের সাথে এখনই কথা বলব। এছাড়াও বরাদ্ধের বাকী ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে শিক্ষকদের ১ লক্ষ টাকা গড়িমসি করে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবার পর বিতরন করলেও বাকী ৩ লক্ষ টাকার কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন মূলক কাজের হদিস সরেজমিনে গিয়ে পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য গত ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ পান হিজলা পিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
বরাদ্দকৃত টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা পাবে শিক্ষকরা, ১ লক্ষ টাকা পাবে শিক্ষার্থীরা। বাকী ৩ লক্ষ টাকা ক্ষুদ্র মেরামতসহ স্কুলের উন্নয়নমুলক কাজ করার বিধান থাকলেও হিজলা পিএন মাধ্যমিক বিদ্যালয় সেই বিধানের তোয়াক্কা না করে প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিনের খেয়াল খুশিমতো তা ব্যবহার ও আত্মসাৎ করেছে বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানান, একাধিক অভিবাবক।
এছাড়াও এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান জামাল ঢালীর সাথে যোগসাজশে বিভিন্ন সময়ে স্কুলের কর্মচারী নিয়োগের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা বানিজ্যের অভিযোগ আছে। এলাকাবাসী দূর্নীতির বরপুত্র সাবেক এমপি পঙ্কজ নাথের সহযোগী এই প্রধান শিক্ষকের দূর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবার জোর দাবী জানান।