বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে যান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। এসময় আহতদের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন তারা।
রোববার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে ঢামেক হাসপাতালের পুরাতন বার্ন ইউনিটে উপস্থিত হয়ে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন দুই উপদেষ্টা। এ সময় আর্থিক সহযোগিতা বাবদ প্রত্যেকের হাতে এক লাখ টাকার চেক দেন তারা।
‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’র পক্ষ থেকে উপদেষ্টারা এ সহায়তা দেন বলে জানা গেছে।
গত জুলাইয়ের শুরুর দিকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। তখন তা দমনে শেখ হাসিনার সরকার মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করে বলে অভিযোগ ওঠে। এ কারণে ওই আন্দোলন রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। একপর্যায়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ঘটে।
এই অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। তার সরকারের অনেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের অনেকে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। কেউ কেউ গা ঢাকা দিয়েছেন।
সেই আন্দোলনে সরকারের হিসাব মতে, অনেক শিশু-কিশোরসহ ৭৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ২৩ হাজারের বেশি মানুষ। এদের মধ্যে ৪০০ জন চোখ হারিয়েছেন। দুই চোখ হারিয়েছেন ২০০ জন।
তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক উপকমিটি এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির তথ্যমতে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৮১ জন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ এবং নিহত ব্যক্তিদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে বেসরকারি এই তালিকায় এসব নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে যাচাইবাছাইয়ের পরই চূড়ান্ত তালিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের সহায়তার জন্য গঠিত হয় ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’। এর সভাপতি করা হয় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। আর সেক্রেটারির দায়িত্ব দেওয়া হয় আন্দোলনে শহীদ মীর মুগ্ধর জমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধকে।