যশোরের চাঁচড়া চেকপোস্ট এলাকায় বাস আড় করে জনভোগান্তি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে দুই সেনা সদস্যকে আহত করা ঘটনায় থানায় শ্রমিকনেতাসহ ১৯ শ্রমিকের নামে মামলা হয়েছে। এছাড়া আটক করা ৮ জনকে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে। যশোর সেনা নিবাসের ওয়ারেন্ট অফিসার বোরহান উদ্দিন মামলাটি করেছেন।
আহত দু’জন সদস্য হচ্ছেন সৈনিক শাহীন ও সৈনিক পিন্টু কুমার রায়। তারা যশোর সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছেন, পলাতক আসামিদের আটকের চেষ্টা চলছে।
সেনা সদস্যের দেয়া মামলা, যশোর জেলা প্রশাসন ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্র থেকে তথ্য মিলেছে, ৭ নভেম্বর সকালে বেনাপোলের ইজিবাইক শ্রমিক ও বাস শ্রমিকদের সাথে গোলযোগের জের ধরে দুপুরে যশোর চাঁচড়া চেকপোস্ট এলাকায় বাস আড় করে দিয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন সাধারণ শ্রমিকরা। এসময় জনভোগান্তি ও যাত্রী ভোগান্তি শুরু হয়। এ খবরে সেনা সদস্যদের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে বাস সরিয়ে রাস্তা পরিস্কার করতে বলেন শ্রমিকদের। এছাড়া যে কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা থেকে বিরত থাকার আহবান জানান। এসময় কয়েকজন উচ্ছৃংখল শ্রমিক সেনা সদস্যদের সাথে অশালীন আচরণ করেন। তারা সেনা সদস্যদের উদ্দেশে ইট পাটকেল ছোড়েন। পরিস্থিতি নিবৃত করার চেষ্টা করলেও শ্রমিকরা মারমুখি আচরণে অটল থাকেন। এ ঘটনায় উর্ধতনদের নির্দেশে সেনা সদস্যরা যশোর জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মুসলিম উদ্দিন পাপ্পু, সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি বিশ্বনাথ বিষু, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানসহ ১১ জন নেতাকর্মীকে হেফাজতে নেন। পরে ৮ নভেম্বর ওই ৩ নেতাকে ছেড়ে দেয়া হয় মুচলেকা নিয়ে।
এদিকে জনভোগান্তি, দুই সেনা সদস্য আহত ও সেনা সদস্যদের উদ্দেশ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করার ঘটনায় ৮ নভেম্বর যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়। মামলায় আসামি হওয়া শ্রমিকরা হচ্ছেন বাবু শেখ (৪৩), ইসমাইল হোসেন (৪০), আলাউদ্দিন আলা (৫৫), দেলোয়ার হোসেন (২৮), দুলাল (৩৫), রেজাউল ইসলাম (৩৫), রিপন মিকাইল (৩৭), বিপ্লব হোসেন (৫২)। এই ৮ জনকে আটক ও চালান দেয়া হয়েছে আদালতে। বাকি পলাতক আসামি ইমাম হোসেন (৩৪), বাবু (৩৭), বিল্লাল হোসেন (৩২), কুরবান (৩৮), শাহাদৎ হোসেন (৩৫), টুকু (৩৯), সাজু (৩২), হামিদ (৩৮), চায়না (৩৬), জুম্মান (৩৪) ও শফিয়ার (৩৭)।
মামলায় বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ রাস্তায় যানজট স্বাভাবিক করার চেষ্টাকালে উৎসুক পরিবহন শ্রমিক নেতাকর্মীরা বেআইনী জনতাবদ্ধে হাতে লাঠি-সোটাসহ সেনাবাহিনীর টহল দলের সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। একপর্যায়ে পরিবহন শ্রমিক নেতাকর্মীরা সেনাবাহিনীর টহল দলের সদস্যদের দেখে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে সেনাবাহিনীর সরকারি কর্তব্য
কাজে বাধা প্রদান করে।