এক বা দুজন নয়, ডজন খানেক নারীর সঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত হয়েছেন জাতীয় আর্থিক দুর্নীতি দমন শাখার পরিচালক। এমন চারশ’র বেশি গোপন ভিডিও ফাঁস হয়েছে অভিযুক্ত সরকারি এ কর্মকর্তার। অবাক করার মতো বিষয় হল ভিডিওতে সরকারি এই কর্মকর্তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় থাকা নারীরা সাধারণ কেউ নয়। বরং সংশ্লিষ্ট নারীরা সকলেই সরকারের উচ্চপর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের স্ত্রী। তারা অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার অফিসেই তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ হয়েছেন। এরই মধ্যে এসব ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শতাধিক নারীর সঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত হওয়া এই কর্মকর্তার নাম বালতাসার ইবাং এনগোঙ্গা। তিনি আফ্রিকার দেশ গিনির জাতীয় আর্থিক দুর্নীতি দমন শাখার পরিচালক। সম্পর্কের সূত্রে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট তেওডোরো ওবিয়াং এনগুয়েমার ভাতিজা। এমনকি ওবিয়াংয়ের মেয়াদ শেষে এনগোঙ্গাকেই গিনির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভাবা হচ্ছিল।
বিভিন্ন ভিডিওতে এনগোঙ্গার সঙ্গে অন্তরঙ্গ নারীদের দেখে বুঝা যায় তারা কেউ কেউ এসব মুহুর্তের ভিডিও ধারণের ব্যাপারে জানতেন। ভিডিওতে এনগোঙ্গোর সঙ্গে প্রেসিডেন্টের আত্মীয়া, বিভিন্ন মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তার স্ত্রীদের অন্তরঙ্গ হতে দেখা যায়।
বিবিসি জানিয়েছে, এসব ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা যায়নি। দেশটিতে স্বাধীন সাংবাদিকতার কোনো অস্তিত্ব না থাকায় এসব ভিডিও উৎস সম্পর্কে খুব বেশি ধারণা পাওয়া যায় না। তবে এনগোঙ্গার ভিডিওগুলো টেলিগ্রাম, টুইটার, টিকটকের মতো বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
অভিযুক্ত এনগোঙ্গা জাতীয় অর্থনৈতিক তদন্ত কমিশনের প্রধান হিসেবে তার হাতে বেশ কিছু অর্থ পাচার সংক্রান্ত অভিযোগের নিষ্পত্তির দায়িত্ব ছিল। তবে যৌন ভিডিও ফাঁস হওয়ার কারণে তিনিই এখন তদন্তের আওতায় চলে এসেছেন। যদিও সরকার বলছে এগুলো তার বিরুদ্ধে গভীর কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ। এমনকি এসব ভিডিও ছড়িয়ে পড়া আটকাতে বেশ প্রচেষ্টা চালিয়েছিল গিনি সরকার। তবে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর এনগোঙ্গার মোবাইল ও কম্পিউটার জব্দ করে সরকার।
ভিডিও ফাঁসের পর ২৫ অক্টোবর এনগোঙ্গাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ এবং কেম্যান দ্বীপপুঞ্জের গোপন অ্যাকাউন্টে জমা করার অভিযোগ আনা হয়। গ্রেপ্তারের পর এনগোঙ্গাকে রাজধানী কোনাক্রির ব্লাক বিচ জেলখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সরকার বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের আটক রেখে নির্দয় নির্যাতন চালানোর অভিযোগ করে আসছিল মানবাধিকার সংস্থাগুলো।