শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৭ অপরাহ্ন

নালিতাবাড়ীর ৪ ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, এখনো পানিবন্দী ৫ হাজার পরিবার

প্রতিনিধি নালিতাবাড়ী, শেরপুর / ১৫ পড়া হয়েছে
আপডেট রবিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৪
বন্যার পানি কমে সড়ক ভেসে উঠলেও মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। শনিবার বিকেলে শেরপু‌রের না‌লিতাবাড়ী‌ উপজেলার বাথুয়ারকান্দা এলাকায়
বন্যার পানি কমে সড়ক ভেসে উঠলেও মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। শনিবার বিকেলে শেরপু‌রের না‌লিতাবাড়ী‌ উপজেলার বাথুয়ারকান্দা এলাকায়

টানা পাঁচ দিন রোদ থাকায় শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার চারটি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। কমেছে ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর পানি। তবে ধীরগতিতে পানি কমায় আজ রোববার সকাল পর্যন্ত তিনটি ইউনিয়নের ২১টি গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে।

শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, গতকাল শনিবার রাত নয়টার দিকে ভোগাই নদের পানি বিপৎসীমার ২৫৪ সেন্টিমিটার এবং চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

পাউবো ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৫ অক্টোবর রাত থেকে ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ও ভারী বর্ষণে নালিতাবাড়ীর কলসপাড়, যোগানিয়া, মরিচপুরান ও রাজনগর ইউনিয়নের ৭১টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে প্রায় ৩১ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি না থাকায় ও আকাশে রোদ থাকায় নিম্নাঞ্চলের প্লাবিত গ্রামগুলোর পানি আস্তে আস্তে কমতে শুরু করেছে। ধীরগতিতে পানি কমার কারণে যোগানিয়ার আটটি গ্রামে তিন হাজার, কলসপাড় ইউনিয়নের আটটি গ্রামের এক হাজার এবং মরিচপুরান ইউনিয়নে পাঁচটি গ্রামের এক হাজার পরিবার পানিবন্দী আছে। এসব এলাকার বাড়িঘরের পানি নেমে গেলেও বাড়ির চারপাশে বন্যার পানি জমে থাকায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। তিনটি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামের রাস্তায় বিভিন্ন অংশে পানিতে ডুবে থাকায় পথচারীদের যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বন্যার কারণে গবাদিপশুর ঠাঁই হয়েছে সেতুর ওপর। শনিবার বিকেলে শেরপু‌রের না‌লিতাবাড়ী‌ উপজেলার গেড়ামারা এলাকায়

বন্যার কারণে গবাদিপশুর ঠাঁই হয়েছে সেতুর ওপর। শনিবার বিকেলে শেরপু‌রের না‌লিতাবাড়ী‌ উপজেলার গেড়ামারা এলাকায়

কাপাসিয়া মাঠখলা গ্রামের কৃষিশ্রমিক রিপন মিয়া বলেন, ‘মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানসহ আমরা সাতজন আট দিন ধইরা আশ্রয়কেন্দ্র থাকতাছি। আমগোর বাড়িঘরের পানিও কিছুডা কমছে। কিন্তু রাস্তায় অহনও পানি থাহায় নৌকা ছাড়া বাড়িত যাওন যায় না। বন্যায় পানিতে ঘরের পিড়ার মাডিও ভাইসা গেছে। অহন ঘর মেরামত লইয়া আমরা দুশ্চিন্তায় আছি।’

গেড়ামারা গ্রামের কৃষক মো. মোস্তফা বলেন, ‘আট দিন ধইরা আমরা সাত-আটজন কৃষক ব্রিজের ওপর পলিথিনের ছাউনি দিয়ে গরু রাখছি। অহন পালাক্রমে সবাই রাত জাইগা পাহারা দেওয় লাগে। ধীরগতিতে পানি কমায় আমরা সবদিক দিয়া কষ্টে আছি।’

 

যোগানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ বলেন, খুবই ধীরগতিতে বন্যার পানি কমছে। নিম্নাঞ্চলে অনেক পরিবার এখনো পানিবন্দী। এই পানি কমতে আরও সময় লাগবে। গ্রামের চলাচলের রাস্তার বিভিন্ন অংশে ডুবে আছে। ফলে লোকজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, ধীরে ধীরে হলেও বন্যার পানি অনেকটাই কমেছে। সেই সঙ্গে পানিবন্দী মানুষের সংখ্যাও কমছে। আজ রোববার সকাল পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ৩০ হাজার ৬০টি পরিবারের মধ্যে শুকনা খাবার ও খিচুড়ি বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারিভাবে বন্যার্ত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।

 

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

আজকের দিন-তারিখ

  • শুক্রবার
  • ৮ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
  • ২৩শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)

Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930