মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে চোখের জলে নিজেদের পাপমুক্তি কামনায় আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ঠাকুরগাঁও শহরের গোবিন্দনগর রুহিয়া রোডের পাশে লাল মেম্বারের ইটভাটা মাঠে ঠাকুরগাঁও জেলা তাবলীগ জামাতের সূরাহ সদস্যদের আয়োজিত ৩ দিনব্যাপী ইজতেমা। এতে অংশ নেয় হাজারো মুসল্লি। সম্প্রতি গত ৫ অক্টোবর শনিবার মোনাজাত পরিচালনা করেন রাজধানীর কাকরাইল মসজিদের মুকিম মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ। এর আগে সম্প্রতি গত ৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের পর আম বয়ান শুরু হয়। আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে আগের দিন রাত থেকেই ঠাকুরগাঁও জেলা সহ বিভিন্ন এলাকার তাবলিগ জামাতের অনুসারীরা ও ইন্দোনেশিয়ার ৮ জন এবং ঢাকার কাকরাইল থেকে মাওলানা মুহাম্মদ উল্লাহ পরিচালনায় ১২জন প্রতিনিধি ইজতেমাস্থলে পৌঁছান। এছাড়া ভোর থেকে পিকআপ ভ্যান, থ্রি-হুইলার অটোরিকশা, কার-মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলে যে যেভাবে পারেন ছোটেন ইজতেমাস্থলের দিকে। ইজতেমা মাঠের জনস্রোত ছড়িয়ে পড়ে মাঠের বাইরেও। মোনাজাতের সময় অনেককে মাঠের আশপাশের রাস্তা, অলি-গলি, বিভিন্ন বাসা-বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ভবনের ছাদে অবস্থান করতে দেখা গেছে। আখেরি মোনাজাতে মুসল্লিদের আসা-যাওয়া নিরাপদ করতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
ইজতেমা আয়োজক কমিটির সদস্যরা জানান, বিশ্ব ইজতেমার ওপর চাপ কমাতে জেলা ভিত্তিক আঞ্চলিক ইজতেমা হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ঠাকুরগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হলো এ ইজতেমা। সম্প্রতি গত ৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বাদ ফজর বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ইজতেমার কার্যক্রম। কোরআন ও হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে আল্লাহ ও নবী-রাসুলের হুকুম-আহকাম মেনে চলার মধ্যেই ইহকাল ও পরকালে সুখ-শান্তি রয়েছে এমন আলোচনা করা হয়।
তারা আরও জানান, ইজতেমায় রাজধানী ঢাকা ছাড়াও ইন্দোনেশিয়ার তাবলিগের জামাতের বিদেশি মেহমান ও মুরব্বিরা অংশ নেন। তাঁরা ৩ দিনের এই ইজতেমায় ইমান-আমলের বয়ানের মাধ্যমে দ্বীনের দাওয়াতে উদ্বুদ্ধ করেন। এদিকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ইজতেমা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ইজতেমা আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে কয়েক স্তরের নিরাপত্তাবলয় তৈরি করা হয়েছিল। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা, বিশৃঙ্খলা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় ছিলেন। সবার সহযোগিতায় সুন্দর, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ইজতেমা শেষ হয়েছে। সন্তুষ্টি লাভের আশায় হাজারো মানুষ আল্লাহর কাছে আর্জি জানান। অনেকে কেঁদে কেঁদে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান। বিশ্ব শান্তির জন্য দোয়া করেন।