নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে সর্বস্তরের মানুষ ভোগান্তিতে পড়লেও সীমিত আয়ের মানুষের জন্য তা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় সংকুলান করার কোনো পথ তারা খুঁজে না পেয়ে নিম্ন আয়ের ও মধ্যবিত্তরা দিশেহারা।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলু ৬০ টাকা, কাচা মরিচ কেজি ৪০০ টাকা, শষা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পিয়াজ ১১০ টাকা, কুমড়া প্রতি পিস ৭০ থেকে ৯০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, কচুমুখি ৭০ টাকা, ঢেড়শ ৮০ টাকা, পেপে ৪০ টাকা, রসুন ২০০ টাকা, লাউ ৮০ টাকা, লেবু পড়তি হালি ৬০ টাকা হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। চাল-ডাল, মাছ, সবজী; সবকিছুর দাম বাড়তি।
রফিকুল ইসলাম। চাকরি করেন জগন্নাথপুরে একটি প্রাইভেট ফার্মে। ১১ বছরের একমাত্র মেয়ে আর স্ত্রী নিয়ে তিন সদস্যের সংসার তার। স্ত্রী জিনাত আরা সানজিদাও চাকুরীজীবী। দুইজনের আয়েও হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন সংসারের খরচ মেটাতে।
শুধু রফিকুল ইসলামই নন; বাজার ঘুরলে এমন ক্ষোভ আর হতাশামাখা চেহারা চোখে পড়ে অহরহ। ক্রেতা-বিক্রেতার বাক-বিতণ্ডাও ইদানিং চোখে পড়ছে বেশি বেশি। এমন হবে নাই বা কেন? মাত্র এক সপ্তাহে তিন দফায় বেড়ে চার সেঞ্চুরি পার করে ফেলেছে কাঁচামরিচ। সপ্তাহ আগেও যে কাঁচামরিচ ২৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে আজ বাজারে ওই কাঁচামরিচের জন্য ৪০০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা।
মধ্যবিত্তের পাতে সবচেয়ে সাধারণ যে ডিম, তার দামও ইতিমধ্যে নাগালের বাইরে। গত এক সপ্তাহে তিন দফা বেড়েছে মধ্যবিত্তের পুষ্টির সবচেয়ে সহজলভ্য এই যোগানদাতার দামও। সবশেষ মঙ্গলবার প্রতি ডজন ডিমের দাম পৌঁছেছে ১৮০ টাকায়। কোনো কোনো খুচরা বিক্রেতা চাইছেন ১৮৫ টাকাও।
ডিমের দামের এমন ডিগবাজীতে হতভম্ব ক্রেতা সাধারণ। জগন্নাথপুর কাঁচাবাজারে দেখা হওয়া হায়দার হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, ভারত থেকে বাকি ৭ টাকার ডিম আসছে। তাহলে ডিমের দাম ১৮০ কেন? বাজার নিয়ন্ত্রণে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে বেশ ক্ষোভও প্রকাশ করেন তিনি। এদিকে চালের দামও কমার লক্ষণ নেই।
ভোক্তারা বলছেন, দেশের পট পরিবর্তন হলেও জন সাধারণের ভাগ্য পরির্বতন হয়নি। উল্টো প্রতিদিনই জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকায় নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের। আগুন লেগে আছে সবজির বাজারেও।
বিক্রেতারা বলছেন, বন্যার কারণে সরবরাহে ঘাটতি, তাই দাম বেড়েছে সবজির। কিন্তু ক্রেতা সাধারণ দুষছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থাকে। অনেকে বলছেন, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে শুনে একটু আশা দেখেছিলাম, কিন্তু এখন শুধুই হতাশা। সরকার শুধু মুখে মুখেই ব্যবস্থা নিচ্ছে। সাধারণের কষ্ট দূর করার নাম নেই। একই অবস্থা মাছের বাজারেও।