১৮ মাস বয়সী শিশু ফাতেমা আক্তার। রশি দিয়ে তার হাত-পা ও মুখ কাপড় দিয়ে গাছের সঙ্গে বাঁধা। এভাবেই মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছেন মা সরুফা আক্তার। ওই সময় শিশুটি ‘মা মা’ বলে চিৎকার করছিল। তার পরও মা’র মন গলেনি।
গত মঙ্গলবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। বুধবার রাতে ওই ঘটনার একটি ভিডিও নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেন শিশুটির বাবা তুষার। যা মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সরুফা আক্তারসহ তিনজনের নামে নাসিরনগর থানায় অভিযোগ করেন তুষার। অভিযোগে তিনি বলেন, দাবি করা দুই লাখ টাকা না দেওয়ায় তার মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেছেন সরুফা।
অভিযুক্ত সরুফা উপজেলার কুণ্ডা ইউনিয়নের আলী হোসেনের মেয়ে। তুষার মিয়া নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা গ্রামের ফারুক মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় তিন বছর আগে সরুফার সঙ্গে তুষারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পরের বছর তাদের সংসারে আসে কন্যাশিশু ফাতেমা। বিয়ের পর থেকেই পরকীয়ায় জড়ান সরুফা। এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। এর পর থেকে সরুফা তার বাবার বাড়িতে থাকেন। তুষারের কাছ থেকে প্রায় সময় টাকা নিতেন সরুফা। সম্প্রতি তুষারের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন সরুফা। টাকা না দেওয়ায়
নিজের ১৮ মাসের মেয়েকে রশি দিয়ে হাত-পা ও মুখ কাপড় দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। শিশুটি ‘মা মা’ বলে চিৎকার করলেও সরুফা শোনেননি। মোবাইল ফোনে ভিডিও করে স্বামী তুষারের কাছে পাঠান।
বাবা তুষার বলেন, আমার স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িত। তাই তার সঙ্গে মতভেদ সৃষ্টি হয়। সরুফা বিভিন্ন সময় আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। সম্প্রতি দুই লাখ টাকা দাবি করে। আমি দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমার কন্যাশিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে হত্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দেয়। আমার মেয়েটি বারবার মা মা বলে চিৎকার করলেও তার মন গলেনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সুরফার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ইমরানুল হক ভূইয়া সমকালকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিশুকে গাছে বেঁধে রাখার একটি ভিডিও দেখে ওসি ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল কাদের বলেন, তুষার মিয়া আজ বিকেলে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।