বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
বীরগঞ্জের ৮নং ভোগনগর ইউনিয়ন বিএনপি’র উদ্যোগে গণসমাবেশ ভারতে নিয়ে পতিতালয়ে স্ত্রীকে বিক্রি; ফিরিয়ে আনলো যশোর পিবিআই র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়; পাঁচজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট যশোরে ডা. শামারুখ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল খালেককে জেল হাজতে প্রেরণ; অগ্নিসংযোগ মামলায় একে একে আটক ২০, ভিন্ন দাবি রাজশাহী জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে ঘুষ ছাড়া মিলবেনা খতিয়ান-নকশা জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন’র ডাইরেক্টর হলেন কৃষিবিদ শামীম সাংবাদিক হামিদুল ইসলাম সফল সংগঠক হিসেবে বিটিএসএফ সম্মাননায় ভূষিত শ্যামনগরে এনগেজ প্রকল্পের নারী সদস্যদের স্বামীদের নিয়ে পুরুষ সংবেদনশীল কর্মশালা জগন্নাথপুরে মসজিদকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জন গ্রেফতার

স্বামীকে ৯ টুকরো করে সেফটিক ট্যাংকে ফেললেন স্ত্রী, আটক ২

অনলাইন ডেস্ক / ১৮ পড়া হয়েছে
আপডেট বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪

পারিবারিক কলহের জের ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে স্বামীকে হত্যা করে নয় টুকরা করে পলিথিনে পেচিয়ে ইট দিয়ে পাশের বাড়ির সেফটি ট্যাঙ্কিতে লুকিয়ে রাখার চার দিন পর লাশ উদ্ধার করেছে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানা পুলিশ। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে নিহতের প্রথম স্ত্রীর ছেলে লুৎফুর রহমান রুবেল বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী মোমেনা বেগম, তার মেয়ে লাকীকে গ্রেফকতার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার (২ অক্টোবর) আদালতের মাধ্যমে মোমেনা ও তার মেয়ে লাকীকে  ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

গত শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিল অরুন মিয়া। নিহতের বাবার নাম সুরুজ বেপারী। এ ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়।

পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ ইউনিয়নের ফরদাবাদ গ্রামের মধ্যপাড়ার অরুণ মিয়া প্রথম স্ত্রী মৃত্যুর পর ৩৫ বছর আগে দ্বিতীয় বিবাহ করেন একই গ্রামের মোমেনা বেগমকে। তাদের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চরম আকার ধারণ করে। একপর্যায়ে অরুন মিয়া তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান রুবেলের কাছে ঢাকায় চলে যান। এদিকে অরুন মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান মধ্যপ্রাচ্যর দুবাইয়ে কর্মরত অবস্থায় মারা যান দেশে এনে তার লাশ দাফন করা হয়। তার বিদেশ যাওয়ার সময় পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ধারদেনা করেন ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দেনা থাকায় পরবর্তীতে অরুন মিয়া তার জমি বিক্রি করে দেনা পরিশোধ করেন। গত শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে অরুণ মিয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।

 

গত সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান লুৎফুর রহমান রুবেল বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডাইরী করেন। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে অরুণ মিয়ার পার্শ্ববর্তী বাড়ির সৌদি প্রবাসী মনির মিয়ার সেফটি ট্যাঙ্কির কাছে দুর্গন্ধ পায় এলাকাবাসী এসময় তারা টর্চ লাইট দিয়ে ভিতরে পলিথিনে মোড়ানো কিছু দেখতে পায়। এরপর থানা পুলিশের খবর দিলে পুলিশ এসে সেফটি ট্যাঙ্কির পানি সেচে নয় টুকরো পলিথিন দিয়ে মোড়ানো অংশ উদ্ধার করে এটা অরুণ মিয়ার লাশ বলে তার ছেলে শনাক্ত করে।

প্রতিবেশী কুদ্দুস মিয়া বলেন, আমরা সাথে অরুণ মিয়া গত শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) মসজিদে গিয়া নামাজ পড়েছে, তারপর থেকে সে নিখোঁজ ছিল। তার বউ আমাদের বলেছে শুক্রবার সকালে সে ঢাকা গেছে। তখনই এই বিষয়টি নিয়া  আমাদের মনে সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আমরা মনিরের বাড়ির সেফটি ট্যাঙ্কে  দুর্গন্ধ পাই, পরে আমরা টর্চ লাইট দিয়ে দেখি পলিথিনে মোড়ানো কিছু জিনিস। আমরা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে ৯ টুকরো পলিথিন উদ্ধার করে এতে প্যাচানো, এইগুলো খুলে লাশ শনাক্ত করে তার ছেলে।”

অরুণ মিয়ার প্রথম স্ত্রীর সন্তান লুৎফুর রহমান রুবেল জানান, “আমার ছোট মা বাবাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমার আপন মা মারা গেছে ৩৫ বছর আগে। আমার বাবা ২০১৭ সাল থেকে টানা আমার কাছে ছিল। কয়েক মাস আগে আমার প্রতিবেশী চাচারা বিষয়টি মিটমাট করে দেয় এবং আমার ছোট মায়ের সাথে আমার বাবা থাকা শুরু করে। এরমধ্যে আমার সৎ ভাই  আশিক দুবাই মারা যায়। তার বিদেশ যাওয়ার সময় অনেক টাকা দেনা ছিল পরবর্তীতে আমার বাবা একসাথে জমি বিক্রি করে এই দেনা পরিশোধ করে। গত কয়দিন যাবত আমি ফোনে আমার বাবার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করি কিন্তু যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। পরে গত রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) আমি গাজীপুর থেকে বাড়িতে আসি এবং বাবাকে খুঁজে না পাওয়ার বিষয় বাঞ্ছারামপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আমাদের বাড়ির পাশে মনির মিয়ার বাড়ির সেফটি ট্যাঙ্কিতে গন্ধ বের হলে এলাকার লোকজন টর্চার ভিতরে পলিথিন কিছু অংশ দেখতে পায় পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে  নয় টুকরো ইট দিয়ে মোড়ানো পলিথিন ব্যাগ উদ্ধার করে। পরে এগুলি খুললে আমার বাবার লাশ শনাক্ত করি।

বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শক তদন্ত সুজন কুমার পাল জানান, “পারিবারিক কলহের জেরে তার দ্বিতীয় স্ত্রী মোমেনা তাকে মাথায় আঘাত করলে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন। মোমেনা চাপাতি (টাকশাল) দিয়ে লাশ টুকরো টুকরো করে নয়টি পলিথিনে বেঁধে পার্শ্ববর্তী সৌদি প্রবাসী মনির মিয়ার সেফটি টাংকিতে ফেলে দেয়। আমাদের ধারণা মোমেনা ছাড়াও এই হত্যাকান্ডে আরো কেউ জড়িত থাকতে পারে। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) প্রতিবেশীরা পলিথিনগুলো দেখে আমাদের খবর দিলে আমরা গিয়ে তা উদ্ধার করি। নিহতের প্রথম স্ত্রীর ছেলে রুবেল সনাক্ত করে এটা অরুন মিয়ার লাশ। এই ঘটনায় অরুণ মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রীর ও মেয়ে লাকিকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। বুধবার(২ অক্টোবর) আদালতের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

আজকের দিন-তারিখ

  • বৃহস্পতিবার
  • ১৪ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১২ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
  • ২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)

Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930