শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৮ অপরাহ্ন

যাপিত জীবনে বন্ধুর স্বভাব-চরিত্রের প্রভাব

নিজেস্ব প্রতিনিধিঃ / ১৬ পড়া হয়েছে
আপডেট বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪

মুসলমানের বন্ধুত্বের ভিত্তি হতে হবে ঈমান ও ইসলামের ওপর। ভালোবাসা হতে হবে শুধু আল্লাহর তায়ালার জন্য। এ ছাড়া যে বন্ধুত্ব কোনো স্বার্থকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে, তা প্রকৃত বন্ধুত্ব নয়। স্বার্থসিদ্ধি হয়ে গেলে সেই বন্ধুত্ব আর টিকে না।

পক্ষান্তরে ঈমানদার ও আল্লাহভীরু লোকদের পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা যেহেতু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য হয়, আর এই দ্বিন ও ঈমান হলো এর ভিত্তি, তাই তাদের বন্ধুত্বে বিচ্ছেদ ঘটে না। আখেরাতেও তাদের বন্ধুত্ব অটুট থাকে, যেমন দুনিয়াতে ছিল।

সুতরাং বাছ-বিচার ছাড়া যে কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা ঠিক নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মানুষ তার বন্ধুর স্বভাব-চরিত্র দ্বারা প্রভাবিত হয়। সুতরাং তোমাদের প্রত্যেকে যেন লক্ষ করে সে কার সাথে বন্ধুত্ব করছে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৮৮০০)

 

এজন্য বন্ধুত্বের জন্য এমন ব্যক্তিকে নির্বাচন করতে হবে, যার মধ্যে বিশেষ গুণ ও উত্তম চরিত্র আছে, যা দেখে মানুষ তার সাথে বন্ধুত্ব করতে আগ্রহী হয়। আল্লাহ তায়ালা উত্তম ও পবিত্র বন্ধুত্বের প্রশংসা করে একে জান্নাতে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের বলবেন, সেসব লোক কোথায়, যারা আমার মহত্ত্বের জন্য পরস্পরে ভালোবেসেছিল? আজ আমি আমার (আরশের) ছায়াতলে তাদের আশ্রয় দেব।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৫৬৬)

মানুষের কর্ম, চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হয় বন্ধুত্বের কল্যাণে। এ কারণে কার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হবে এবং কাকে বর্জন করতে হবে এ ব্যাপারে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা আমাদের পথ দেখিয়েছেন।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘মুমিন নর ও মুমিন নারী পরস্পর একে অন্যের বন্ধু। তারা পরস্পরে সত্কাজে আদেশ করে, অসত্ কাজে বাধা দেয়, নামাজ কায়েম করে, জাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে। তারা এমন লোক, যাদের প্রতি আল্লাহ নিজ অনুগ্রহ বর্ষণ করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ৭১)

যে ব্যক্তির বন্ধুবান্ধব খারাপ, সে ব্যক্তি তার বন্ধুদের চেয়েও খারাপ। কেননা ভালো মানুষ ভালো মানুষের সাথেই বন্ধুত্ব করে। আর খারাপ মানুষ বন্ধু হিসেবে খারাপ লোকদের বেছে নেয়। সুতরাং কারো সাথে বন্ধুত্ব করতে চাইলে কেবল ভালো মানুষের সাথেই বন্ধুত্ব করবে। (রওজাতুল উকালা : ১০২)

মোট কথা, বন্ধুত্ব হতে হবে পরকালের কল্যাণে। আর পরকালের কল্যাণে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ বন্ধু নির্বাচনে একজন মানুষ হয়ে ওঠে পরিপূর্ণ ঈমানদার।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে আল্লাহর (সন্তুষ্টির) উদ্দেশ্যে (কাউকে) ভালোবাসে এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঘৃণা করে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে দান করে কিংবা না করে, সে তার ঈমান পূর্ণ করে নিল।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬৮১)

মহান আল্লাহ আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতে উত্তম সঙ্গীর ব্যবস্থা করে দিন।

লেখক : মুদাররিস, রাজাবাড়ী, জামিয়া আরাবিয়া  দারুস সুন্নাহ, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

আজকের দিন-তারিখ

  • শুক্রবার
  • ৮ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
  • ২৩শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)

Archive Calendar

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930