প্রিয় মানুষটির সঙ্গে প্রেম বা ভালোবাসার কোনো সম্পর্ক নেই, কিন্তু এরপরও কাউকে যদি ভালো লাগে, তাকে নিজের জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়ার জন্য দোয়া করা যাবে? এমনটা প্রশ্ন করেন অনেক ভাইবোন।
উত্তর হলো- নির্দিষ্ট কাউকে জীবনসঙ্গী হিসেবে কামনা করে দোয়া করা উচিত নয়। বরং উচিত হচ্ছে, আল্লাহর কাছে কল্যাণ ও উত্তম জীবন সঙ্গীর জন্য দোয়া করা। কেননা, আল্লাহ আপনার ধারণা থেকেও উত্তম জীবনসঙ্গী দিতে পারেন।
তবে এরপরও যদি কাউকে পাওয়ার দোয়া করতে চান, তাহলে এভাবে দোয়া করুন- ‘হে আল্লাহ! যদি সে আমার জন্য কল্যাণকর হয়, তাহলে তাকে আমার জন্য জীবনসঙ্গী হিসেবে কবুল করুন।’
অনেক সময় এমন হয়, আজ যে জিনিস পাওয়ার জন্য আমরা উদগ্রীব থাকি, দুই দিন পরই সেটার কারণে উৎকণ্ঠিত হয়ে উঠি। আবার আজ যা থেকে দূরে সরে থাকার ব্যাপারে চেষ্টারত থাকি, কয়েক দিন পর তা পেয়েছি বলে আনন্দিত হই।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোনো একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তো বা কোনো একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২১৬)
প্রখ্যাত মুসলিম মনীষী আল্লামা ইবনুল জাওজি (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলার কাছে কোনো কিছু নির্দিষ্ট করে চাওয়া থেকে বিরত থাকবে। তবে (কোনো কিছু নির্দিষ্ট করে চাওয়ার) কল্যাণের দোয়া সঙ্গে যুক্ত থাকলে অসুবিধা নেই। কেননা, অনেক সময় বহু পার্থিব কাঙ্ক্ষিত বস্তু অর্জন, ভবিষ্যতে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। (সায়দুল খাতির : ৩৫২)
উত্তম জীবনসঙ্গী লাভের বড় উদাহরণ পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহর নবী মুসা (আ.)-এর কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। সেখানে মুসা (আ.)-এর একটি দোয়াও এসেছে। যে দোয়া পড়ার পর আল্লাহ তা’আলা তার জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। তার আশ্রয়ের পাশাপাশি উত্তম জীবনসঙ্গীনিরও ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সেই দোয়াটি হলো-
ﺭَﺏِّ ﺇِﻧِّﻲ ﻟِﻤَﺎ ﺃَﻧْﺰَﻟْﺖَ ﺇِﻟَﻲَّ ﻣِﻦْ ﺧَﻴْﺮٍ ﻓَﻘِﻴﺮٌ
(উচ্চারণ : রাব্বি ইন্নি লিমা- আনজালতা ইলাইয়া মিন খাইরিন ফাকির।) অর্থ : হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ পাঠাবে, আমি তার মুখাপেক্ষী। (সুরা আল-কাসাস, আয়াত : ২৪)
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত আরও একটি দোয়াও করা যায়। আল্লাহ তা’আলা দোয়া শিখিয়ে ইরশাদ করেন-
ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻫَﺐْ ﻟَﻨَﺎ ﻣِﻦْ ﺃَﺯْﻭَﺍﺟِﻨَﺎ ﻭَﺫُﺭِّﻳَّﺎﺗِﻦَﺍ ﻗُﺮَّﺓَ ﺃَﻋْﻴُﻦٍ ﻭَﺍﺟْﻌَﻠْﻨَﺎ ﻟِﻠْﻤُﺘَّﻘِﻴﻦَ ﺇِﻣَﺎﻣًﺎ
(উচ্চারণ : রাব্বানা-হাবলানা-মিন আজওয়া-জিনা- ওয়া যুররিইয়া-তিনা, কুররাতা আ‘ইউনিওঁ, ওয়াজ‘আলনা-লিলমুত্তাকিনা ইমা-মা-।)
অর্থ : হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদের আল্লাহভীরুদের জন্য আদর্শস্বরূপ করো। (সুরা ফুরকান, আয়াত : ৭৪)